পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলায়, কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের কাছে অবস্থিত মহিপুর শুটকি পল্লি বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম শুটকি উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র। বঙ্গোপসাগরের তীরে গড়ে ওঠা এই পল্লি হাজারো জেলে ও শ্রমিকের কর্মসংস্থানের উৎস।
কার্যক্রম:
শীত মৌসুমের শুরু থেকে (সাধারণত অক্টোবর-নভেম্বর) এই পল্লির কর্মব্যস্ততা বেড়ে যায়। জেলেরা গভীর সমুদ্র থেকে বিভিন্ন প্রকার মাছ ধরে নিয়ে আসেন। এরপর নারী-পুরুষ শ্রমিকেরা মিলে সেই মাছ বাছাই করে, পরিষ্কার করে এবং লবণ মাখিয়ে বাঁশের তৈরি মাচায় রোদে শুকাতে দেন। দিনের পর দিন কড়া রোদে শুকিয়ে মাছগুলো শুটকিতে পরিণত হয়।
বৈশিষ্ট্য:
১. মাছের বৈচিত্র্য: এখানে ছুরি, লইট্টা, ফাইস্যা, পোয়া, রূপচাঁদা, চিংড়িসহ নানা প্রজাতির সামুদ্রিক মাছের শুটকি তৈরি করা হয়।
২. অর্থনৈতিক গুরুত্ব: এটি একটি বিশাল বাণিজ্যিক কেন্দ্র। এখান থেকে উৎপাদিত শুটকি সারা দেশের চাহিদা পূরণ করে বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়। এটি এই অঞ্চলের অর্থনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৩. কর্মসংস্থান: এই পল্লিকে কেন্দ্র করে প্রায় দশ হাজারেরও বেশি মানুষের জীবিকা নির্বাহ হয়, যার মধ্যে একটি বড় অংশ নারী শ্রমিক।
৪. পর্যটন আকর্ষণ: কুয়াকাটায় আগত পর্যটকদের কাছেও এটি একটি আকর্ষণীয় স্থান। অনেকে শুটকি তৈরির বিশাল কর্মযজ্ঞ দেখতে এবং টাটকা শুটকি কিনতে এখানে ভিড় করেন।
মহিপুর শুটকি পল্লিতে প্রবেশ করলেই বাতাসে শুটকির তীব্র গন্ধ এবং সারি সারি মাচায় শুকোতে থাকা মাছের দৃশ্য চোখে পড়ে, যা এই অঞ্চলের মানুষের জীবন-সংগ্রাম ও সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য চিত্র তুলে ধরে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন